কোশ চক্র কাকে বলে ? কোশ চক্রের বিভিন্ন পর্যায় গুলি কি কি ?
উত্তরঃ প্রতিটি জীবের মতো প্রতিটি কোশেরও একটি জীবন-চক্র আছে । কোশের এই জীবন-চক্র বিভাজন [division] ও অবিভাজন [non-division] এই দু'টি ঘটনার মধ্যে আবর্তিত হ'তে থাকে । জনিতৃ কোশের [parent cell] বিভাজনের মধ্যে দিয়ে অপত্য কোশ [daughter cell] সৃষ্টি হয় এবং অপত্য কোশের মৃত্যুর পর তার জীবনাবসান ঘটে । কোশের সত্তা অর্জন ও সত্তার বিলোপ যে হেতু কোশ বিভাজনের মধ্যে দিয়েই ঘটে, সেহেতু একে কোশ চক্র বা সেল সাইকল [cell cycle] বলা হয় ।
• কোশ চক্রের সংজ্ঞা [Defination of Cell Cycle]:- একটি কোশ বিভাজনের আরম্ভ থেকে পরবর্তী কোশ বিভাজনের শুরু পর্যন্ত যে সমস্ত ধারাবাহিক ও চক্রাকার দশাগুলির মধ্য দিয়ে একটি কোশজীবন অতিবাহিত হয়, তাদের সামগ্রিকভাবে কোশচক্র বলে ।
• কোশ চক্রের পর্যায় [Stages of Cell Cycle]:- কোশ চক্রের দুটি পর্যায় থাকে, যথা: [১] অবিভাজন পর্যায় বা ইন্টারফেজ বা M ফেজ এবং [২] কোশ বিভাজন পর্যায় বা কোশ বিভাজন কাল ।
[১] অবিভাজন পর্যায় বা ইন্টারফেজ বা M ফেজ [Interphase]:- এই পর্যায়ে কোশ বিভাজন ঘটে না । এই সময় অপত্য কোশে পরবর্তী বিভাজনের জন্য প্রস্তুতি পর্ব চলে । এই পর্বে বিপাকীয় কার্যাবলি দ্রুতহারে চলতে থাকে এবং DNA -র সংশ্লেষণ কাজ সংঘটিত হয় । ইন্টারফেজ পর্যায়ে কোশের প্রাথমিক বৃদ্ধির দশাটিকে G1 দশা বা গ্যাপ-1 [G1 stage] বলে । এই সময় RNA -তে প্রোটিন সংশ্লেষ ঘটে এবং কোশের বৃদ্ধি ঘটে, তাই একে কোশ-বৃদ্ধি দশাও বলে । এর পরবর্তী পর্যায়ে DNA সংশ্লেষণ ঘটে, একে S দশা [S-stage] বা সংশ্লেষণ দশা বলে । DNA সংশ্লেষণ শেষ হওয়ার পর যখন দ্বিতীয়বার কোশের বৃদ্ধি ঘটে, তখন তাকে G2 দশা বা গ্যাপ-2 [G2 stage] বলে । এই দশাটি হল DNA সংশ্লেষণ ও প্রফেজ দশার শুরুর মধ্যবর্তী সময় কাল । G1 ও G2 দশায় চরম বিপাকীয় সক্রিয়তা দেখা যায় ।
[২] কোশ বিভাজন পর্যায় বা কোশ বিভাজন কাল [Mitotic phase]:- ইন্টারফেজ দশার পর মাইটোটিক ফেজ বা বিভাজন দশা শুরু হয় । মাইটোটিক ফেজটি প্রধানত চারটি দশায় বিভক্ত, যথা : প্রফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ, টেলোফেজ দশা ।
উদ্ভিদ হরমোনগুলি কি কি ? অক্সিন হরমনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ ? এর দুটি কাজ লেখ ?
উত্তরঃ হরমোন হ'ল একটি রাসায়নিক যা জীবের কার্যকারিতা এবং বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি উদ্ভিদেও এই রাসায়নিকগুলি গাছের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা পালন করে। তারা উদ্ভিদ হরমোন হিসাবে পরিচিত। গাছের হরমোনগুলি গাছের নির্দিষ্ট অঞ্চলে যেমন পাতা, ডালপালা, শিকড় ইত্যাদিতে সংশ্লেষিত হয় এবং ফাংশনের জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়। চারটি মূল বৈশিষ্ট্য উদ্ভিদের হরমোনগুলিতে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এগুলি অন্তঃসত্ত্বা প্রকৃতি, গতিশীলতা, নিয়ামক প্রভাব এবং অসাধারণ প্রতিক্রিয়া।
উদ্ভিদ হরমোনগুলির প্রধান দলসমূহ
অক্সিন, গিব্বেরেলিন, সাইটোকিনিন, অ্যাবসিসিক এসিড এবং ইথিলিন নামে পাঁচটি বৃহত উদ্ভিদ হরমোন রয়েছে।
অক্সিন হরমনের বৈশিষ্ট্য ঃ (i) অক্সিন বৃদ্ধি সহায়ক হরমােন। এগুলি নিউক্লিয়াস বিভাজনে সাহায্য করে এবং নবজাত কোষ বৃদ্ধির হার ত্বরান্বিত করে।
(ii) উদ্ভিদের ট্রপিক চলন বিশেষ করে ফটোট্রপিজম ও জিওট্রপিজিম অক্সিনের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয়। অক্মিন কাণ্ডের আলোকিত অংশের বিপরীত দিকে পরিবাহিত হয়।
(iii) অক্সিন (কাইনিনের উপস্থিতিতে) ক্যামবিয়াম নামে নামে গৌণ ভাজককলায় কোষ বিভাজনের সূচনা করে।
(iv) অক্সিনের প্রভাবে কোষের রসস্ফীত চাপ বৃদ্ধি পায় বলে এটি পরোক্ষভাবে জল শোষণে সাহায্য করে।
(v) নিষেকের পরে ডিম্বাশয়ে অক্সিনের মাত্রা বেড়ে যায় বলে ডিম্বক বীজে এবং ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয়।
(vi) অক্সিন উদ্ভিদের পাতা ও ফল ঝরে পড়া দেরী করে।
(vii) অক্সিনের প্রভাবে শীর্ষমুকুলের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে কিন্তু কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ফলে অক্সিনের মাত্রা বেশি হলে বেশী শাখা-প্রশাখা সৃষ্টি হয় না।
(viii) অক্সিন পুষ্প-সৃষ্টির সূচনা করে।
(ix) উদ্ভিদের লিঙ্গ নির্ধারণেও অক্সিন ভূমিকা গ্রহণ করে।
(x) অক্সিনের জন্য পাথরকুচি পাতার ধার থেকে ও অনেক উদ্ভিদের কর্তিত শাখা-প্রশাখা থেকে অস্থানিক মুল বের হয়।
অক্সিন হরমনের ব্যাবহার ঃ
বীজহীন ফল উত্পাদন:- বীজহীন ফল (টম্যাটো, বেগুন, লঙ্কা, লাউ, কুমড়ো, পেঁপে, তরমুজ আঙ্গুর প্রভৃতি) উত্পাদনের জন্য অক্সিন প্রয়োগ করা হয় ।
আগাছা দমন:- চাষের খেতে আগাছা দমনের জন্য কৃত্রিম অক্সিন [2,4-D] ব্যবহার করা হয় ।
সাড়া কাকে বলে ? প্রাণী দেহে উদ্দিপনায় সাড়া দেওয়ার পদ্ধতি আলোচনা করো ?
উত্তরঃ নিজে করো
ফ্লাজেলা কি ? প্যারামেসিউয়াম কিভাবে গমন করে ?
উত্তরঃ ফ্লাজেলা : কোষের চারদিকে ক্ষুদ্র সুতার মতো বর্ধিত অংশ রয়েছে,একে ফ্লাজেলা বলে। এগুলো আন্দোলিত করে ব্যাকটেরিয়া স্থান পরিবর্তন করে।
থ্যালাসেমিয়া কী? এর প্রকারভেদগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে।
উত্তর : থ্যালাসেমিয়া : জিনগত ত্রুটির কারণে সৃষ্ট যে বংশগত রােগে হিমােগ্লোবিনের গ্লোবিন অংশে কোনাে একটি পেপটাইড শৃঙ্খল সংশ্লেষিত হয় না অথবা স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় কম সংশ্লেষিত হয়, সেই বংশগত রােগকেই থ্যালাসেমিয়া বলে। এই রােগ হলে হিমােগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, লােহিত রক্ত কণিকা ক্ষুদ্র হয়। এবং স্বল্পদিন বাঁচে। ফলস্বরূপ অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ : থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকারের হয়।
যথা—(i) আলফা (0) থ্যালাসেমিয়া এবং (ii) বিটা (B) থ্যালাসেমিয়া।
(i) আলফা (0) থ্যালাসেমিয়া : হিমােগ্লোবিনের আলফা পেপটাইড শৃঙ্খলের সংশ্লেষণ হ্রাস পেলে বা বন্ধ হলে, তাকে আলফা 0 থ্যালাসেমিয়া বলে। মানুষের 16নং ক্রোমােজোম জোড়ার প্রতিটিতে দুটি করে মােট চারটি ৫ শৃঙ্খল উৎপাদনকারী অ্যালিল থাকে। এর মধ্যে দুটি অ্যালিলের মিউটেশন হলে a. থ্যালাসেমিয়া মাইনর ও চারটিতেই মিউটেশন ঘটলে ɑ থ্যালাসেমিয়া মেজর দেখা যায়।
(ii) বিটা (B) থ্যালাসেমিয়া : হিমােগ্লোবিনের বিটা পেপটাইড শৃঙ্খলের উৎপাদন বন্ধ হলে বা হ্রাস পেলে তাকে বিটা থ্যালাসেমিয়া বলে। বিটা থ্যালাসেমিয়ার আবিষ্কর্তা আমেরিকান চিকিৎসক থমাস বেনটন কুলির নামানুসারে একে কুলির অ্যানিমিয়া বলে। এটিও মেজর ও মাইনর দুই প্রকার হয়। 11নং ক্রোমােজোম জোড়ায় অবস্থিত B শৃঙ্খল সংশ্লেষণকারী দুটি অ্যালিলের মিউটেশন ঘটলে B থ্যালাসেমিয়া মেজর ও একটিতে মিউটেশন ঘটলে B থ্যালাসেমিয়া মাইনর ঘটে।
অযৌন জননের দুটি সুবিধা ও অসুবিধা লেখ ?
উত্তরঃ অযৌন জননের প্রধান সুবিধা হল এই যে,
[i] এই রকম জননে কম সময়ে বেশি সংখ্যায় জীব সৃষ্টি হয় ।
[ii] এই রকম জননে জনিতৃ জীব ও অপত্য জীব সমবৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয় ।
কিন্তু অযৌন জননের প্রধান অসুবিধা হল এই যে, এই জননে উত্পন্ন জীবগুলির মধ্যে ভেদ [variation] দেখা না দেওয়ায়, পরিবেশের কোনোরকম বিরাট পরিবর্তন ঘটলে এরা সহজেই অবলুপ্ত হয়ে যেতে পারে ।
অভিযোজন কাকে বলে ? ক্যাকটাস এর অভিযোজন গত বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ ?
উত্তরঃ সংজ্ঞা:- পারিপার্শ্বিক পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বা মানিয়ে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য জীবদেহের গঠনগত, শারীরবৃত্তীয় ও আচরণগত যে স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে যা বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে জৈব অভিব্যক্তির পথকে সুগম করে, তাকেই অভিযোজন [Adaptation] বলে ।
ক্যাকটাসের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য ঃ
[1] মূল:-
[a] ক্যাকটাসের মূলতন্ত্র সুগঠিত । মূলের বৃদ্ধির হার অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় খুব বেশি । মূল মাটির নীচে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত । জল সংগ্রহের জন্য মূলগুলি সুদীর্ঘ হয় ।
[b] মূলে মূলরোম এবং মূলত্রান থাকে ।
[2] কান্ড:-
[a] কান্ড সাধারণত খর্বাকার, কাষ্ঠল এবং পুরু বাকল বা মোমজাতীয় পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে ।
[b] ফণী মনসার কান্ড রসাল, সবুজ এবং চ্যাপ্টা পাতার মতো । এরকম কান্ডকে পর্ণকান্ড বলে । পর্ণকান্ডে অনেক পর্ব এবং পর্বমধ্য থাকে ।
[c] কান্ডের ত্বকে পুরু কিউটিকল থাকে । অনেকক্ষেত্রে রোম বা মোমের আবরণ থাকে । বাষ্পমোচন রোধের জন্য এই রকম অভিযোজন ।
[d] কান্ডের সংবহন কলা এবং যান্ত্রিক কলা সুগঠিত ।
[e] পর্ণকান্ডের কোশগুলি খুবই ঘনসন্নিবিষ্ট । বায়ু গহ্বর (বাতাবকাশ) সাধারণত থাকে না ।
[f] কোশে মিউসিলেজ (এক রকম পিচ্ছিল পদার্থ) থাকায় এইসব গাছের জল ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি হয় ।
[3] পাতা:-
[a] ক্যাকটাসের পাতা আকারে ছোটো এবং সংখ্যায় কম থাকে ।
[b] ফণীমনসা গাছের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে । বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি কাঁটায় রূপান্তরিত হয় ।
[c] অন্যান্য ক্যাকটাসের পাতার ত্বক খুব পুরু এবং কিউটিকলযুক্ত । বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি অনেক সময় মোম জাতীয় পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে ।
[d] পাতার পত্ররন্ধ্র খুব কম সংখ্যায় থাকে । পত্ররন্ধ্রগুলি পাতার নিম্নত্বকের ভিতরের দিকে উত্পন্ন হয় । পত্ররন্ধ্রের রক্ষীকোশ দুটো আকারে খুব ছোটো হয় ।
জীববৈচিত্র্য কাকে বলে ? এটি কয় প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট অঞ্চলে জিন, প্রজাতি ও বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য অনুযায়ী সেই অঞ্চল বা স্থানে জীবের যে বৈচিত্র্য ও বৈষম্য এবং স্থান ও সময় পরিবর্তনে জীবকূলের বৈশিষ্ট্যের যে পরিবর্তন ঘটে তাকে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
জীব বৈচিত্র্য প্রধানত ৩ প্রকার-
জিনগত বৈচিত্র্য: বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে, কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির নিজেরদের মধ্যে অথবা একই পপুলাশানের বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে জিনগত পার্থক্য
প্রজাতিগত বৈচিত্র্য: পৃথিবীর প্রজাতিগত বিচিত্রতাকে ইহা নির্দেশ করে
বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য: পৃথিবীর জৈবভৌগলিক অঞ্চলগুলোর বিভিন্নতা যেমন – হ্রদ, মরুভূমি, নদীর মোহনা
জিবাশন কাকে বলে ? ঘোরার বিবর্তনের ক্ষেত্রে জিবাস্নের গুরুত্ব কি ?
উত্তরঃ ভূগর্ভের শিলাস্তরে সুদীর্ঘকাল যাবৎ প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত কিন্তু আজকের পৃথিবীতে লুপ্ত জীবদেহের সামগ্রিক বা আংশিক প্রস্তরীভূত অবস্থা অথবা তার ছাপকে জীবাশ্ম বলে ।
জীবাশ্ম থেকে বিবর্তনের সম্পূর্ণ ও অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায় ঘোড়ার উদ্ভাবনে। আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি বছর আগে ঘোড়ার আদি পূর্বপুরুষ “ইয়োহিপ্পিয়াস” প্রায় ১১ ইঞ্চি উঁচু ছিলো। এর সামনের পায়ে চারটি এবং পিছনের পায়ে তিনটি নখযুক্ত আঙুল ছিল। “ইয়োহিপ্পিয়াস”এর পরবর্তি ধারা “মেসোহিপ্পাস”এর উচ্চতা ছিলো ২ ফুট এবং পায়ে তিনটি করে নখযুক্ত আঙুল ছিল। পরবর্তী স্তরে ৪০ ইঞ্চি উঁচু “মেরিচিপ্পাস”এর তিনটি আঙুলের মধ্যে একটি মাত্র কর্মক্ষম ছিল। এর পরে আগমন ঘটে ৫০ ইঞ্চি উঁচু “প্লিওহিপ্পাস” জাতীয় ঘোড়ার। এর সামনে ও পিছনের পায়ে একটি মাত্র আঙুল দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক কালের ৬০ ইঞ্চি ঘোড়া “ইকুয়াস” এই প্লিওহিপ্পাসের বংশধর।
উত্তরঃ প্রতিটি জীবের মতো প্রতিটি কোশেরও একটি জীবন-চক্র আছে । কোশের এই জীবন-চক্র বিভাজন [division] ও অবিভাজন [non-division] এই দু'টি ঘটনার মধ্যে আবর্তিত হ'তে থাকে । জনিতৃ কোশের [parent cell] বিভাজনের মধ্যে দিয়ে অপত্য কোশ [daughter cell] সৃষ্টি হয় এবং অপত্য কোশের মৃত্যুর পর তার জীবনাবসান ঘটে । কোশের সত্তা অর্জন ও সত্তার বিলোপ যে হেতু কোশ বিভাজনের মধ্যে দিয়েই ঘটে, সেহেতু একে কোশ চক্র বা সেল সাইকল [cell cycle] বলা হয় ।
• কোশ চক্রের সংজ্ঞা [Defination of Cell Cycle]:- একটি কোশ বিভাজনের আরম্ভ থেকে পরবর্তী কোশ বিভাজনের শুরু পর্যন্ত যে সমস্ত ধারাবাহিক ও চক্রাকার দশাগুলির মধ্য দিয়ে একটি কোশজীবন অতিবাহিত হয়, তাদের সামগ্রিকভাবে কোশচক্র বলে ।
• কোশ চক্রের পর্যায় [Stages of Cell Cycle]:- কোশ চক্রের দুটি পর্যায় থাকে, যথা: [১] অবিভাজন পর্যায় বা ইন্টারফেজ বা M ফেজ এবং [২] কোশ বিভাজন পর্যায় বা কোশ বিভাজন কাল ।
[১] অবিভাজন পর্যায় বা ইন্টারফেজ বা M ফেজ [Interphase]:- এই পর্যায়ে কোশ বিভাজন ঘটে না । এই সময় অপত্য কোশে পরবর্তী বিভাজনের জন্য প্রস্তুতি পর্ব চলে । এই পর্বে বিপাকীয় কার্যাবলি দ্রুতহারে চলতে থাকে এবং DNA -র সংশ্লেষণ কাজ সংঘটিত হয় । ইন্টারফেজ পর্যায়ে কোশের প্রাথমিক বৃদ্ধির দশাটিকে G1 দশা বা গ্যাপ-1 [G1 stage] বলে । এই সময় RNA -তে প্রোটিন সংশ্লেষ ঘটে এবং কোশের বৃদ্ধি ঘটে, তাই একে কোশ-বৃদ্ধি দশাও বলে । এর পরবর্তী পর্যায়ে DNA সংশ্লেষণ ঘটে, একে S দশা [S-stage] বা সংশ্লেষণ দশা বলে । DNA সংশ্লেষণ শেষ হওয়ার পর যখন দ্বিতীয়বার কোশের বৃদ্ধি ঘটে, তখন তাকে G2 দশা বা গ্যাপ-2 [G2 stage] বলে । এই দশাটি হল DNA সংশ্লেষণ ও প্রফেজ দশার শুরুর মধ্যবর্তী সময় কাল । G1 ও G2 দশায় চরম বিপাকীয় সক্রিয়তা দেখা যায় ।
[২] কোশ বিভাজন পর্যায় বা কোশ বিভাজন কাল [Mitotic phase]:- ইন্টারফেজ দশার পর মাইটোটিক ফেজ বা বিভাজন দশা শুরু হয় । মাইটোটিক ফেজটি প্রধানত চারটি দশায় বিভক্ত, যথা : প্রফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ, টেলোফেজ দশা ।
উদ্ভিদ হরমোনগুলি কি কি ? অক্সিন হরমনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ ? এর দুটি কাজ লেখ ?
উত্তরঃ হরমোন হ'ল একটি রাসায়নিক যা জীবের কার্যকারিতা এবং বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি উদ্ভিদেও এই রাসায়নিকগুলি গাছের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা পালন করে। তারা উদ্ভিদ হরমোন হিসাবে পরিচিত। গাছের হরমোনগুলি গাছের নির্দিষ্ট অঞ্চলে যেমন পাতা, ডালপালা, শিকড় ইত্যাদিতে সংশ্লেষিত হয় এবং ফাংশনের জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়। চারটি মূল বৈশিষ্ট্য উদ্ভিদের হরমোনগুলিতে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এগুলি অন্তঃসত্ত্বা প্রকৃতি, গতিশীলতা, নিয়ামক প্রভাব এবং অসাধারণ প্রতিক্রিয়া।
উদ্ভিদ হরমোনগুলির প্রধান দলসমূহ
অক্সিন, গিব্বেরেলিন, সাইটোকিনিন, অ্যাবসিসিক এসিড এবং ইথিলিন নামে পাঁচটি বৃহত উদ্ভিদ হরমোন রয়েছে।
অক্সিন হরমনের বৈশিষ্ট্য ঃ (i) অক্সিন বৃদ্ধি সহায়ক হরমােন। এগুলি নিউক্লিয়াস বিভাজনে সাহায্য করে এবং নবজাত কোষ বৃদ্ধির হার ত্বরান্বিত করে।
(ii) উদ্ভিদের ট্রপিক চলন বিশেষ করে ফটোট্রপিজম ও জিওট্রপিজিম অক্সিনের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয়। অক্মিন কাণ্ডের আলোকিত অংশের বিপরীত দিকে পরিবাহিত হয়।
(iii) অক্সিন (কাইনিনের উপস্থিতিতে) ক্যামবিয়াম নামে নামে গৌণ ভাজককলায় কোষ বিভাজনের সূচনা করে।
(iv) অক্সিনের প্রভাবে কোষের রসস্ফীত চাপ বৃদ্ধি পায় বলে এটি পরোক্ষভাবে জল শোষণে সাহায্য করে।
(v) নিষেকের পরে ডিম্বাশয়ে অক্সিনের মাত্রা বেড়ে যায় বলে ডিম্বক বীজে এবং ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয়।
(vi) অক্সিন উদ্ভিদের পাতা ও ফল ঝরে পড়া দেরী করে।
(vii) অক্সিনের প্রভাবে শীর্ষমুকুলের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে কিন্তু কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ফলে অক্সিনের মাত্রা বেশি হলে বেশী শাখা-প্রশাখা সৃষ্টি হয় না।
(viii) অক্সিন পুষ্প-সৃষ্টির সূচনা করে।
(ix) উদ্ভিদের লিঙ্গ নির্ধারণেও অক্সিন ভূমিকা গ্রহণ করে।
(x) অক্সিনের জন্য পাথরকুচি পাতার ধার থেকে ও অনেক উদ্ভিদের কর্তিত শাখা-প্রশাখা থেকে অস্থানিক মুল বের হয়।
অক্সিন হরমনের ব্যাবহার ঃ
বীজহীন ফল উত্পাদন:- বীজহীন ফল (টম্যাটো, বেগুন, লঙ্কা, লাউ, কুমড়ো, পেঁপে, তরমুজ আঙ্গুর প্রভৃতি) উত্পাদনের জন্য অক্সিন প্রয়োগ করা হয় ।
আগাছা দমন:- চাষের খেতে আগাছা দমনের জন্য কৃত্রিম অক্সিন [2,4-D] ব্যবহার করা হয় ।
সাড়া কাকে বলে ? প্রাণী দেহে উদ্দিপনায় সাড়া দেওয়ার পদ্ধতি আলোচনা করো ?
উত্তরঃ নিজে করো
ফ্লাজেলা কি ? প্যারামেসিউয়াম কিভাবে গমন করে ?
উত্তরঃ ফ্লাজেলা : কোষের চারদিকে ক্ষুদ্র সুতার মতো বর্ধিত অংশ রয়েছে,একে ফ্লাজেলা বলে। এগুলো আন্দোলিত করে ব্যাকটেরিয়া স্থান পরিবর্তন করে।
থ্যালাসেমিয়া কী? এর প্রকারভেদগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে।
উত্তর : থ্যালাসেমিয়া : জিনগত ত্রুটির কারণে সৃষ্ট যে বংশগত রােগে হিমােগ্লোবিনের গ্লোবিন অংশে কোনাে একটি পেপটাইড শৃঙ্খল সংশ্লেষিত হয় না অথবা স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় কম সংশ্লেষিত হয়, সেই বংশগত রােগকেই থ্যালাসেমিয়া বলে। এই রােগ হলে হিমােগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, লােহিত রক্ত কণিকা ক্ষুদ্র হয়। এবং স্বল্পদিন বাঁচে। ফলস্বরূপ অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ : থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকারের হয়।
যথা—(i) আলফা (0) থ্যালাসেমিয়া এবং (ii) বিটা (B) থ্যালাসেমিয়া।
(i) আলফা (0) থ্যালাসেমিয়া : হিমােগ্লোবিনের আলফা পেপটাইড শৃঙ্খলের সংশ্লেষণ হ্রাস পেলে বা বন্ধ হলে, তাকে আলফা 0 থ্যালাসেমিয়া বলে। মানুষের 16নং ক্রোমােজোম জোড়ার প্রতিটিতে দুটি করে মােট চারটি ৫ শৃঙ্খল উৎপাদনকারী অ্যালিল থাকে। এর মধ্যে দুটি অ্যালিলের মিউটেশন হলে a. থ্যালাসেমিয়া মাইনর ও চারটিতেই মিউটেশন ঘটলে ɑ থ্যালাসেমিয়া মেজর দেখা যায়।
(ii) বিটা (B) থ্যালাসেমিয়া : হিমােগ্লোবিনের বিটা পেপটাইড শৃঙ্খলের উৎপাদন বন্ধ হলে বা হ্রাস পেলে তাকে বিটা থ্যালাসেমিয়া বলে। বিটা থ্যালাসেমিয়ার আবিষ্কর্তা আমেরিকান চিকিৎসক থমাস বেনটন কুলির নামানুসারে একে কুলির অ্যানিমিয়া বলে। এটিও মেজর ও মাইনর দুই প্রকার হয়। 11নং ক্রোমােজোম জোড়ায় অবস্থিত B শৃঙ্খল সংশ্লেষণকারী দুটি অ্যালিলের মিউটেশন ঘটলে B থ্যালাসেমিয়া মেজর ও একটিতে মিউটেশন ঘটলে B থ্যালাসেমিয়া মাইনর ঘটে।
অযৌন জননের দুটি সুবিধা ও অসুবিধা লেখ ?
উত্তরঃ অযৌন জননের প্রধান সুবিধা হল এই যে,
[i] এই রকম জননে কম সময়ে বেশি সংখ্যায় জীব সৃষ্টি হয় ।
[ii] এই রকম জননে জনিতৃ জীব ও অপত্য জীব সমবৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয় ।
কিন্তু অযৌন জননের প্রধান অসুবিধা হল এই যে, এই জননে উত্পন্ন জীবগুলির মধ্যে ভেদ [variation] দেখা না দেওয়ায়, পরিবেশের কোনোরকম বিরাট পরিবর্তন ঘটলে এরা সহজেই অবলুপ্ত হয়ে যেতে পারে ।
অভিযোজন কাকে বলে ? ক্যাকটাস এর অভিযোজন গত বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ ?
উত্তরঃ সংজ্ঞা:- পারিপার্শ্বিক পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বা মানিয়ে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য জীবদেহের গঠনগত, শারীরবৃত্তীয় ও আচরণগত যে স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে যা বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে জৈব অভিব্যক্তির পথকে সুগম করে, তাকেই অভিযোজন [Adaptation] বলে ।
ক্যাকটাসের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য ঃ
[1] মূল:-
[a] ক্যাকটাসের মূলতন্ত্র সুগঠিত । মূলের বৃদ্ধির হার অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় খুব বেশি । মূল মাটির নীচে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত । জল সংগ্রহের জন্য মূলগুলি সুদীর্ঘ হয় ।
[b] মূলে মূলরোম এবং মূলত্রান থাকে ।
[2] কান্ড:-
[a] কান্ড সাধারণত খর্বাকার, কাষ্ঠল এবং পুরু বাকল বা মোমজাতীয় পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে ।
[b] ফণী মনসার কান্ড রসাল, সবুজ এবং চ্যাপ্টা পাতার মতো । এরকম কান্ডকে পর্ণকান্ড বলে । পর্ণকান্ডে অনেক পর্ব এবং পর্বমধ্য থাকে ।
[c] কান্ডের ত্বকে পুরু কিউটিকল থাকে । অনেকক্ষেত্রে রোম বা মোমের আবরণ থাকে । বাষ্পমোচন রোধের জন্য এই রকম অভিযোজন ।
[d] কান্ডের সংবহন কলা এবং যান্ত্রিক কলা সুগঠিত ।
[e] পর্ণকান্ডের কোশগুলি খুবই ঘনসন্নিবিষ্ট । বায়ু গহ্বর (বাতাবকাশ) সাধারণত থাকে না ।
[f] কোশে মিউসিলেজ (এক রকম পিচ্ছিল পদার্থ) থাকায় এইসব গাছের জল ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি হয় ।
[3] পাতা:-
[a] ক্যাকটাসের পাতা আকারে ছোটো এবং সংখ্যায় কম থাকে ।
[b] ফণীমনসা গাছের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে । বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি কাঁটায় রূপান্তরিত হয় ।
[c] অন্যান্য ক্যাকটাসের পাতার ত্বক খুব পুরু এবং কিউটিকলযুক্ত । বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি অনেক সময় মোম জাতীয় পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে ।
[d] পাতার পত্ররন্ধ্র খুব কম সংখ্যায় থাকে । পত্ররন্ধ্রগুলি পাতার নিম্নত্বকের ভিতরের দিকে উত্পন্ন হয় । পত্ররন্ধ্রের রক্ষীকোশ দুটো আকারে খুব ছোটো হয় ।
জীববৈচিত্র্য কাকে বলে ? এটি কয় প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট অঞ্চলে জিন, প্রজাতি ও বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য অনুযায়ী সেই অঞ্চল বা স্থানে জীবের যে বৈচিত্র্য ও বৈষম্য এবং স্থান ও সময় পরিবর্তনে জীবকূলের বৈশিষ্ট্যের যে পরিবর্তন ঘটে তাকে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
জীব বৈচিত্র্য প্রধানত ৩ প্রকার-
জিনগত বৈচিত্র্য: বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে, কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির নিজেরদের মধ্যে অথবা একই পপুলাশানের বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে জিনগত পার্থক্য
প্রজাতিগত বৈচিত্র্য: পৃথিবীর প্রজাতিগত বিচিত্রতাকে ইহা নির্দেশ করে
বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য: পৃথিবীর জৈবভৌগলিক অঞ্চলগুলোর বিভিন্নতা যেমন – হ্রদ, মরুভূমি, নদীর মোহনা
জিবাশন কাকে বলে ? ঘোরার বিবর্তনের ক্ষেত্রে জিবাস্নের গুরুত্ব কি ?
উত্তরঃ ভূগর্ভের শিলাস্তরে সুদীর্ঘকাল যাবৎ প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত কিন্তু আজকের পৃথিবীতে লুপ্ত জীবদেহের সামগ্রিক বা আংশিক প্রস্তরীভূত অবস্থা অথবা তার ছাপকে জীবাশ্ম বলে ।
জীবাশ্ম থেকে বিবর্তনের সম্পূর্ণ ও অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায় ঘোড়ার উদ্ভাবনে। আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি বছর আগে ঘোড়ার আদি পূর্বপুরুষ “ইয়োহিপ্পিয়াস” প্রায় ১১ ইঞ্চি উঁচু ছিলো। এর সামনের পায়ে চারটি এবং পিছনের পায়ে তিনটি নখযুক্ত আঙুল ছিল। “ইয়োহিপ্পিয়াস”এর পরবর্তি ধারা “মেসোহিপ্পাস”এর উচ্চতা ছিলো ২ ফুট এবং পায়ে তিনটি করে নখযুক্ত আঙুল ছিল। পরবর্তী স্তরে ৪০ ইঞ্চি উঁচু “মেরিচিপ্পাস”এর তিনটি আঙুলের মধ্যে একটি মাত্র কর্মক্ষম ছিল। এর পরে আগমন ঘটে ৫০ ইঞ্চি উঁচু “প্লিওহিপ্পাস” জাতীয় ঘোড়ার। এর সামনে ও পিছনের পায়ে একটি মাত্র আঙুল দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক কালের ৬০ ইঞ্চি ঘোড়া “ইকুয়াস” এই প্লিওহিপ্পাসের বংশধর।