সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখাে ।
1. প্রায় কত শতাংশ অঞ্চলে ভূমিরূপ পরিবর্তনে নদী ভুমিকা নেয় ?
ক ) ১০ শতাংশ খ ) ৩০ শতাংশ । গ) ৫০ শতাংশ ঘ ) ৭০ শতাংশ
উত্তরঃ ঘ ) ৭০ শতাংশ
2. নদীর জলপ্রবাহ পরিমাপ করা হয় কোন এককে ?
ক) কিউসেক - এ খ ) মিলিবার - এ । গ) নট - এ ঘ) কিলােমিটার - এ
উত্তরঃ ক) কিউসেক - এ
3. উচ্চগতিতে নদী উপত্যকার আকৃতি হয় ইংরেজি কোন অক্ষরের মতাে ?
ক ) U- এর মতাে খ) W - এর মতাে গ ) Z - এর মতাে ঘ ) V- এর মতাে
উত্তরঃ ঘ ) V- এর মতাে ।
4. নদী যে - খাতের মধ্য দিয়ে বয়ে চলে , তাকে বলে —
ক ) অববাহিকা খ) নদীখাত গ) দোয়াব ঘ ) জলবিভাজিকা
উত্তরঃ খ) নদীখাত
5. ক্ষয়কার্য সর্বাধিক হয় নদীর -
ক) উচ্চগতিতে খ ) মধ্য ও নিম্নগতিতে গ) মধ্যগতিতে ঘ ) নিম্নগতিতে
উত্তরঃ ক) উচ্চগতিতে
6. নিম্নলিখিত কোনটি ভারতের নিত্যবহ নদী ?
ক) গঙ্গা খ ) অজয় গ) দামােদর ঘ) তাপ্তি
উত্তরঃ ক) গঙ্গা
7. সঞ্চয়কার্য সর্বাধিক পরিমাণে হয় নদীর কোন্ গতিতে ?
ক) উচ্চ গতিতে খ ) মধ্যগতিতে গ) নিম্নগতিতে ঘ ) মধ্য ও নিম্নগতিতে
উত্তরঃ গ) নিম্নগতিতে
8. দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে বলে -
ক) দোয়াব খ ) ধারণ অববাহিকা গ ) অববাহিকা ঘ ) বদ্বীপ
উত্তরঃ ক) দোয়াব
9. যে - উচ্চভূমি দুটি নদী অববাহিকাকে পৃথক করে , তাকে বলে -
ক ) দোয়াব খ) জলবিভাজিকা গ ) উপত্যকা । ঘ ) বদ্বীপ
উত্তরঃ খ) জলবিভাজিকা
10. নদী তার শাখা ও উপনদী - সহ যে - অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবহমান হয় , তাকে বলে নদীর
ক )দোয়াব খ)অববাহিকা গ) বদ্বীপ ঘ ) নদী প্রবাহপথ
উত্তরঃ খ)অববাহিকা
11. মূলনদী থেকে যে - জলধারা নির্গত হয় , তাকে বলে
ক) উপনদী খ) যুগ্মনদী গ) শাখানদী ঘ) প্রধান নদী
উত্তরঃ গ) শাখানদী
12. পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের নদী যখন প্রধান নদীতে এসে মেশে তাকে -
ক) যুগ্মনদী খ ) অন্তর্বাহিনী নদী গ) উপনদী ঘ) শাখানদী
উত্তরঃ গ) উপনদী
13. আদর্শ নদীর কটি গতি থাকে ?
ক) ২টি খ) ৩টি গ) ৪টি ঘ ) ৫টি
উত্তরঃ খ) ৩টি
14. নিম্নলিখিত কোন নদীটি সবচেয়ে বেশি জলবহন করে?
ক ) আমাজন খ) নীলনদ গ) রাইন ঘ ) কলােরাডাে
উত্তরঃ খ) নীলনদ
15. ভারতে কোনটি আদর্শ নদীর উদাহরণ ?
ক ) তাপ্তি খ ) নর্মদা গ) গঙ্গা ঘ) কাবেরী
উত্তরঃ গ) গঙ্গা
16. গঙ্গানদীর উৎসভূমি হল-
ক) সিয়াচেন হিমবাহ খ) সিন - কা - বাব হিমবাহ গ) গঙ্গোত্রী হিমবাহ ঘ) চেমায়ুং দুং হিমবাহ
উত্তরঃ গ) গঙ্গোত্রী হিমবাহ
17. কোনটি প্রস্রবণ থেকে উৎপন্ন নদী ?
ক) সিন্ধু খ) ব্ৰহ্মপুত্র গ) বিতস্তা ঘ) দামােদর
উত্তরঃ গ) বিতস্তা
18.এশিয়ার একটি অন্তর্বাহিনী নদী হল —
ক) আমুদরিয়া খ) লেনা গ) সিকিয়াং ঘ) ইরাবতী
উত্তরঃ ক) আমুদরিয়া
19. নদীর বহনকার্যের উল্লেখযােগ্য প্রক্রিয়া কোনটি ?
ক) অবঘর্ষ খ) ঘর্ষণ গ) লম্ফদান ঘ) উৎপাটন
উত্তরঃ গ) লম্ফদান
20. নদীর ক্ষয়কার্যের উল্লেখযােগ্য প্রক্রিয়া কোনটি ?
ক) লম্ফদান খ) আকর্ষণ গ) উৎপাটন ,ঘ) অবঘর্ষ
উত্তরঃ ঘ) অবঘর্ষ
21. নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হলে তার বহন ক্ষমতা কতগুণ বাড়ে ?
ক ) ৪ গুণ খ) ৮ গুণ গ) ১৬ গুণ ঘ) ৬৪ গুণ
উত্তরঃ ঘ) ৬৪ গুণ
22. যে - স্থানে নদী পরস্পর মিলিত হয় , তা হল-
ক) নদীমােহানা খ) নদীসংগম গ) নদীদোয়াব ঘ) নদীদ্বীপ
উত্তরঃ খ) নদীসংগম
23. পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ কোন্ নদীতে দেখা যায় ?
ক) নীলনদ খ) আমাজন গ) গঙ্গা - ব্রহ্মপুত্র ঘ) মিসিসিপি - মিসৌরি
উত্তরঃ গ) গঙ্গা - ব্রহ্মপুত্র
24. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী গিরিখাত দেখা যায় কোন্ নদীতে?
ক) সিন্ধু খ) ইয়ারলুং সাংপাে গ) কলােরাডাে ঘ) সেন্ট লরেন্স
উত্তরঃ খ) ইয়ারলুং সাংপাে
25. আল ক্যানন দ্যা কলকা গিরিখাতটি কোন মহাদেশে অবস্থিত ?
ক) উত্তর আমেরিকা খ) দক্ষিণ আমেরিকা গ) আফ্রিকা ঘ) এশিয়া
উত্তরঃ খ) দক্ষিণ আমেরিকা
26. গেরসােপ্পা জলপ্রপাত কোন নদীতে অবস্থিত ?
ক) কৃষ্ণা খ) গােদাবরী গ) সরাবতী ঘ) নর্মদা
উত্তরঃ গ) সরাবতী
27. নদী তার গতিপথে সিঁড়ির মতাে ধাপে ধাপে নীচে নেমে এলে, তাকে কি বলে-
ক) রাপিডস খ) ক্যাসকেড গ) ক্যাটারাক্ট ঘ) খরস্রোত
উত্তরঃ খ) ক্যাসকেড
28. পলল ব্যজনী গড়ে ওঠে-
ক) পার্বত্য উচ্চভূমিতে খ) পর্বত পাদদেশে গ) নিম্নগতিতে ঘ) বদ্বীপ অঞ্চলে
উত্তরঃ খ) পর্বত পাদদেশে
29. বদ্বীপ গঠিত হয় নদীর -
ক) মোহনায় খ) মধ্যগতিতে গ) উৎসস্থলে ঘ) পার্বত্য গতিতে
উত্তরঃ ক) মোহনায়
30. জলপ্রপাতের নীচে বিশালাকার গর্তকে কী বলে ?
ক) মনথকুপ খ) আর্টেজীয় কুপ গ) খরস্রোতা ঘ) প্রপাতকূপ
উত্তরঃ ঘ) প্রপাতকূপ
31. মাজুলি নদীদ্বীপ গড়ে উঠেছে কোন নদীতে ?
ক) গঙ্গানদীতে খ) গােদাবরী নদীতে গ) মহানদী নদীতে ঘ) ব্রহ্মপুত্র নদীতে
উত্তরঃ ঘ) ব্রহ্মপুত্র নদীতে
32. নদীর মধ্যগতিতে প্রধান কাজ হল —
ক) ক্ষয় খ) ক্ষয় ও বহন গ) বহন ঘ) বহন ও সঞ্চয়
উত্তরঃ খ) ক্ষয় ও বহন
33. মধ্যগতিতে নদী উপত্যকার আকৃতি হয় ইংরেজি -
ক) O অক্ষরের মতাে খ) V অক্ষরের মতাে গ) U অক্ষরের মতাে ঘ) W অক্ষরের মতাে
উত্তরঃ গ) U অক্ষরের মতাে
34. ডেল্টা অক্ষরটি -
ক) বাংলা বর্ণমালার খ) ইংরেজি বর্ণমালার গ) গ্রিক বর্ণমালার ঘ) সংস্কৃত বর্ণমালার
উত্তরঃ গ) গ্রিক বর্ণমালার
35. প্লাবনভূমির সন্নিহিত ভূমিরূপ হল -
ক) পলল ব্যজনী খ) খরস্রোত গ) স্বাভাবিক বাঁধ ঘ) জলপ্রপাত
উত্তরঃ গ) স্বাভাবিক বাঁধ
36. পলল ব্যজনীর আকার হয় —
ক) বৃত্তাকার খ) চৌকাকার গ) গােলাকার ঘ) ত্রিকোণাকার
উত্তরঃ ঘ) ত্রিকোণাকার
37. পাখির পায়ের পাতার মতাে দেখতে বদ্বীপ হল —
ক) মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ খ) নীলনদ নদীর বদ্বীপ গ) গঙ্গানদীর বদ্বীপ ঘ) রাইন নদীর বদ্বীপ
উত্তরঃ ক) মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ
38. করাতের দাঁতের মতাে দেখতে বদ্বীপ হল
ক) গঙ্গানদীর বদ্বীপ খ) মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ গ) টাইবার নদীর বদ্বীপ ঘ) রাইন নদীর বদ্বীপ
উত্তরঃ গ) টাইবার নদীর বদ্বীপ
39. বদ্বীপ প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল —
ক) ক্ষয় খ) বহন গ) ক্ষয় ও বহন ঘ) সঞ্চয়
উত্তরঃ ঘ) সঞ্চয়
40. কোনটি পার্বত্য অঞ্চলের নদীর বৈশিষ্ট্য ?
ক) খরস্রোতা নদী খ) মন্থর গতির নদী গ) U - আকৃতির উপত্যকাবিশিষ্ট নদী ঘ) স্রোতহীন নদী
উত্তরঃ ক) খরস্রোতা নদী।
41. সুন্দরবন অঞ্চল বদ্বীপের কোন অংশের মধ্যে পড়ে ?
ক) মৃতপ্রায় খ) পরিণত গ) সক্রিয় ঘ) আংশিক সক্রিয়
উত্তরঃ গ) সক্রিয়
42. সুন্দরবনের নিউমূর হল -
ক) জলপ্রপাত খ) নবগঠিত দ্বীপ গ) পলল ব্যজনী ঘ) বালিয়াড়ি
উত্তরঃ খ) নবগঠিত দ্বীপ
43. অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি হয় নদীর কোন্ কার্যের ফলে ? ক) ক্ষয় খ) ক্ষয় ও বহন গ) বহন ও সঞ্চয় ঘ)ক্ষয় , বহন , সঞ্চয় প্রক্রিয়ার মিলিত কার্যে
উত্তরঃ ঘ)ক্ষয় , বহন , সঞ্চয় প্রক্রিয়ার মিলিত কার্যে
44. নদীর জলস্রোত পরিমাপক যন্ত্রের নাম —
ক) ব্যারােমিটার খ)অ্যানিমােমিটার গ) হাইগ্রোমিটার ঘ) কারেন্টমিটার
উত্তরঃ ঘ) কারেন্টমিটার
45. নদীর তলদেশের সঙ্গে নদীবাহিত শিলাখণ্ডের আঘাতকে বলে —
ক) দ্রবণ ক্ষয় খ) বুদ্বুদ ক্ষয় গ) অবঘর্ষ ক্ষয় ঘ) জলপ্রবাহ ক্ষয়
উত্তরঃ গ) অবঘর্ষ ক্ষয়
46. কোন ভূমিরূপটি নদীর উচ্চগতিতে সৃষ্টি হয় ?
ক) স্বাভাবিক বাঁধ খ) পলল ব্যজনী গ) মন্থকুপ ঘ) বদ্বীপ
উত্তরঃ গ) মন্থকুপ
47. লবণযুক্ত শিলাস্তরের উপর নদীর প্রধান ক্ষয়প্রক্রিয়াটি হল —
ক) অবঘর্ষ ক্ষয় খ) ঘর্ষণ ক্ষয় গ) জলপ্রবাহ ক্ষয় ঘ) দ্রবণ ক্ষয়
উত্তরঃ ঘ) দ্রবণ ক্ষয়
48. কোনটি ভারতের জলবিভাজিকার উদাহরণ ?
ক) পশ্চিমঘাট পর্বত খ) পশ্চিম উপকূল সমভূমি গ) গঙ্গা সমভূমি ঘ) রাজস্থান মরুভূমি
উত্তরঃ ক) পশ্চিমঘাট পর্বত
49. কোন ভূমিরূপটি নদীর মধ্যগতিতে সৃষ্টি হয় ?
ক) প্রপাতকূপ খ) পলল ব্যজনী গ) বদ্বীপ ঘ) খরস্রোত
উত্তরঃ খ) পলল ব্যজনী
50. নদীর মােহানায় ডেল্টা ভূমিরূপের নামকরণ কে করেন ?
ক) পাওয়েল খ) থর্নবেরি গ) হেরােডােটাস ঘ) অ্যালমান
উত্তরঃ গ) হেরােডােটাস
51. কোন ভূমিরূপটি নদী তার নিম্নগতিতে সৃষ্টি করে ?
ক) স্বাভাবিক বাঁধ খ) পলল ব্যজনী গ) প্রপাতকূপ ঘ) শৃঙ্খলিত শৈলশিরা
উত্তরঃ ক) স্বাভাবিক বাঁধ
52. বদ্বীপে কোন্ ধরনের পদার্থ নদী সঞ্চয় করে -
ক) বােল্ডার খ) পেবেল গ) বালি ঘ) সূক্ষ্ম পলি
উত্তরঃ খ) পেবেল
53. পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়ন কোন নদীতে অবস্থিত -
ক) সাংপাে খ) কলােরাডাে গ) মিসিসিপি ঘ) সিন্ধু
উত্তরঃ খ) কলােরাডাে
54. কোনটি নদীর ক্ষয়কার্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় -
ক) অবঘর্ষ খ) ঘর্ষণক্ষয় গ) অপবাহন ঘ) দ্রবণ
উত্তরঃ গ) অপবাহন
55. কোন্ প্রবাহে নদীর জলের বেগ সর্বাধিক হয় —
ক) উচ্চপ্রবাহ খ) মধ্যপ্রবাহ গ) নিম্নপ্রবাহ ঘ) বদ্বীপ প্রবাহ
উত্তরঃ ক) উচ্চপ্রবাহ।
এক কথায় প্রশ্নউত্তর
1. নদী কাকে বলে ?
উত্তর: যে - নদীতে সারাবছর জল প্রবাহিত হয় ।
2. ভারতের একটি নিত্যবহ নদীর উদাহরণ দাও ।
উত্তর: গঙ্গানদী ।
3. নদী কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয়সাধন করে ?
উত্তর: অবঘর্ষ , ঘর্ষণ , জলপ্রবাহ ক্ষয় , বুদবুদ ক্ষয় , দ্রবণ প্রক্রিয়ায় ।
4. নদী কী কী প্রক্রিয়ায় বহনকার্য করে ?
উত্তর: লম্ফদান , ভাসমান , দ্রবণ ও আকর্ষণ প্রক্রিয়ায় ।
5. নদী দ্বারা প্রবাহিত পদার্থকে কী বলে ?
উত্তর: নদীর ভার বা বােঝা ।
6. চওড়া নদীর মােহানা কী নামে পরিচিত ?
উত্তর: খাঁড়ি ।
7. পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলের নদীগুলিতে জলের প্রধান উৎস কোনটি ?
উত্তর: বৃষ্টির জল ।
8. ভূপৃষ্ঠে প্রবহমান জলরাশির পরিমাণ কত শতাংশ ? উত্তর: পৃথিবীতে পৃষ্ঠজলের শতকরা পরিমাণ মিষ্টি জলের মাত্র ১ . ৩ % ।
9. নদীতে জলের বহমানতা বজায় থাকে কীভাবে ? উত্তর: জলচক্রের মাধ্যমে ।
10. নদীর কোন গতিতে জলপ্রপাত দেখা যায় ?
উত্তর: উচ্চগতিতে ।
11. জলপ্রপাতের তলদেশে সৃষ্ট গর্তকে কী বলে ?
উত্তর: প্লাঞ্জপুল বা প্রপাতকুপ ।
12. নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ড নদীতে আঘাত করে যে - ক্ষয় করে সেই ক্ষয়পদ্ধতির নাম কী ?
উত্তর: অবঘর্ষ ক্ষয় ।
13. নদীর জলের প্রবাহ পরিমাপের একককে কী বলে ? উত্তর: কিউসেক ও কিউমেক ।
14. ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত একটি নিমজ্জমান দ্বীপের নাম করাে ।
উত্তর: নিউমূর বা দক্ষিণ তালপট্টি ।
15. নদীর মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত ঘনফুট জলকে কী বলে ?
উত্তর: কিউসেক ।
16. পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্যের নাম কী ?
উত্তর: সুন্দরবন ।
17. গঙ্গা কেন আদর্শ নদী ?
উত্তর: গঙ্গানদীতে উচ্চ বা পার্বত্য , মধ্য বা সমভূমি , নিম্ন বা বদ্বীপ প্রবাহ সুস্পষ্ট , তাই একে আদর্শ নদী বলে ।
18. সুন্দরবন এলাকার কয়েকটি দ্বীপের নাম লেখাে যেগুলি ক্রমশ নিমজ্জিত হচ্ছে ।
উত্তর: ঘােড়ামারা , লােহাচড়া ও নিউমুর ।
19. নিউমূর দ্বীপ বাংলাদেশে কী নামে পরিচিত ?
উত্তর: দক্ষিণ তালপট্টি ।
20. নদীর ক্ষয়সীমা ধারণার প্রবর্তক কে ?
উত্তর: J W Powell .
21. নদীর নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘন আয়তন জল প্রবাহিত হয় , তাকে কী বলে ?
উত্তর: নদীর জলক্ষরণ ।
22. নদীর ষষ্ঠঘাত সূত্র ’ - এর প্রবর্তক কে ?
উত্তর: W . Hopkins .
23. শুষ্ক অঞ্চলে গঠিত গিরিখাতকে কী বলা হয় ?
উত্তর: ক্যানিয়ন ।
24. অসংখ্য পটহােল একসঙ্গে গড়ে উঠলে তাকে কী বলে ?
উত্তর: পটহােল কলােনি ।
25. ভারতের কোন ভূপ্রাকৃতিক অংশের নদীগুলিতে গিরিখাত দেখা যায় ?
উত্তর: হিমালয় ।
26. কোন গতিতে নদী তার সৃষ্ট পদার্থের সবটাই বহন করে ?
উত্তর: উচ্চগতিতে ।
27. অসংখ্য ছােটো ছােটো রাপিডস পাশাপাশি অবস্থান করলে তা কী নামে পরিচিত ?
উত্তর: ক্যাসকেড ।
28. পর্বতের পাদদেশে নদীসঞ্চয়কার্যে সৃষ্ট হাতপাখার মতাে ভূমিরূপটির নাম কী ?
উত্তর: পলল ব্যজনী বা পলল পাখা ।
29. পশ্চিমবশের কোন অঞ্চলের নদীতে খাঁড়ি দেখা যায় ? উত্তর: সুন্দরবন বা সক্রিয় বদ্বীপ ।
30. পৃথিবীর বৃহত্তম কোন্ নদীটির মােহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি ?
উত্তর: আমাজন ।
31. নদী ক্ষয়কার্যের কোন্ প্রক্রিয়ায় মন্থকুপ গড়ে ওঠে ? উত্তর: অবঘর্ষ ।
32. নদী অববাহিকার পার্বত্য অংশ কী নামে পরিচিত ? উত্তর: ধারণ অববাহিকা ।
33. কোন্ গতিতে নদী সর্বাধিক সঞ্চয় করে ?
উত্তর: নিম্নগতিতে ।
34. ভারতে প্রবাহিত দুটি পূর্ববর্তী নদীর উদাহরণ দাও । উত্তর: গঙ্গা ও সিন্ধু ।
35. বৃহদায়তন রাপিডসকে কী বলা হয় ?
উত্তর: জলপ্রপাত ।
36.ক্যাটারাক্ট কী ?
উত্তর: জলপ্রপাতে প্রবল জলরাশি প্রবাহিত হলে তা ক্যাটারাক্ট ।
37. বিন্দুবার কী ?
উত্তর: নদীবাঁকের মৃদুঢ়ালু উত্তল অংশের সঞ্চয়কে বিন্দুবার বলে ।
38. কোন্ নদীর নাম অনুসারে মিয়েন্ডার ভূমিরূপের নামকরণ হয়েছে ?
উত্তর: তুরস্কের মিয়েন্ডারেস ।
39. গঙ্গা - ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপের আকৃতি কীরূপ ?
উত্তর: ধনুকের মতাে বা ধনুকাকৃতি ।
40. খাঁড়ি ভূমিরূপটি কোথায় গঠিত হয় ?
উত্তর: নিম্নগতিতে নদীর মােহানায় ।
41. একটি নদীর উদাহরণ দাও যেটি বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও চিরপ্রবাহী ।
উত্তর: আফ্রিকার কঙ্গো নদী ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর (Short Question and Answer)
1. নদী ( River ) কাকে বলে ?
উত্তর : নদী হল এক স্বাভাবিক জলধারা যা উচ্চভূমি থেকে তুষারগলা জল বা বৃষ্টির জলে পুষ্ট হয়ে বা প্রস্রবণ থেকে উৎপন্ন হয়ে ভূমির ঢাল অনুসারে ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট খাত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগর , হ্রদ বা অন্য কোনাে জলধারায় এসে মিলিত হয় । যেমন — গঙ্গা , সিন্ধু , ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি ।
2. জলচক্র ( Hydrological cycle ) কাকে বলে ?
উত্তর : বাষ্পীভবন , ঘনীভবন , অধঃক্ষেপণ , পৃষ্ঠপ্রবাহ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারিমণ্ডল , বায়ুমণ্ডল ও স্থলভাগের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে জলের বিরামহীন চক্রাকার পরিবর্তন হল জলচক্র ।
3. জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি কী কী ?
উত্তর : জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি হল — বাষ্পীভবন ( Evaporation ) , ঘনীভবন ( Condensation ) , অধঃক্ষেপণ ( Precipitation ) , পৃষ্ঠপ্রবাহ ( Surface runoff ) , অনুস্রাবণ ( Infiltration ) ইত্যাদি ।
4. নদীর জলের উৎসগুলি কী কী ? বা , নদীর জল কোথা থেকে আসে ?
উত্তর : বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির জল , তুষার , বরফ ও হিমবাহ গলা জল , প্রস্রবণ দিয়ে বেরিয়ে আসা ভৌমজল ইত্যাদি হল নদীর জলের উৎস ।
5. উপনদী ও শাখানদী কাকে বলে ?
উত্তর : উপনদী ( Tributaries ) : প্রধান নদীর গতিপথের অনেক স্থানে ছােটো নদী এসে মূলনদীতে মিলিত হয় , এইসব ছােটো ছােটো নদীকে প্রধান নদীর উপনদী বলা হয় । যেমন — যমুনা হল গঙ্গার উপনদী ।
শাখানদী ( Distributeries ) : কোনাে বড় নদী থেকে অন্য কোনাে নদী বেরিয়ে এসে সাগরে বা অন্য কোনাে নদীতে বা সেই নদীতেই এসে পড়লে তাকে শাখানদী বলে । যেমন — গঙ্গার প্রধান শাখানদী হল ভাগীরথী - হুগলি ।
6. নদী অববাহিকা ( River Basin ) কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে - সুনির্দিষ্ট অঞ্চললের মধ্য দিয়ে মূলনদী, তার শাখা নদী ও উপনদী - সহ প্রবাহিত হয় , তাকে বলা হয় নদী অববাহিকা ।
7.নদীর ধারণ অববাহিকা ( Catchment Basin ) বলতে কী বােঝ ?
উত্তর : নদী অববাহিকার মধ্যে পার্বত্য বা উচ্চভূমি অংশে নদী যতটুকু অঞ্চল অধিকার করে আছে , তাকে বলা হয় নদীর ধারণ অববাহিকা ।
8. ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন ?
উত্তর : নদীর গতিবেগ ও ঢাল , নদীতে উপস্থিত পলির পরিমাণ ও তার গুণাগুণ , জলের পরিমাণ ইত্যাদি অনেকটাই নদীর ধারণ অববাহিকার চরিত্রের ওপর নির্ভরশীল । তাই ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ।
9. নদী উপত্যকা ( River Valley ) কাকে বলে ?
উত্তর : উৎস থেকে মােহানা পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা ।
10. নদীখাত কী ?
উত্তর : নদী উপত্যকার নির্দিষ্ট যে - অংশ দিয়ে জল বাহিত হয় , তা হল নদীখাত ।
11. নদীখাত ও নদী উপত্যকার মধ্যে তফাত কী ?
উত্তর : নদীর উৎস থেকে মােহনা পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা । অপরদিকে নদী উপত্যকার যে - নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে জল প্রবাহিত হয় , তা হল নদীখাত । অতএব নদী উপত্যকার মধ্যেই নদীখাত অবস্থান করে ।
12. নদীবর্তন ( River Regime ) কী ?
উত্তর : নদীর জলের পরিমাণ সারাবছর সমান থাকে না । ঋতু - পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কখনও কম বা কখনও বেশি হয় । নদীর জলধারার এই পর্যায়ক্রমিক ও ঋতুভিত্তিক পরিবর্তনকেই নদীবর্তন বলে ।
13. জলবিভাজিকা ( Watershed ) বলতে কী বােঝ ?
উত্তর : যে - উচ্চভূমি দুই বা ততােধিক নদীগােষ্ঠী বা নদী বা নদী অববাহিকাকে পৃথক করে, তাকে জলবিভাজিকা বলে। পর্বত , পাহাড় , উচ্চ মালভূমি ইত্যাদি ভূমিরূপ জলবিভাজিকা হিসেবে অবস্থান করে ।
14. ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকার নাম লেখাে ।
উত্তর : ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকা হল — হিমালয় পার্বত্যভূমি এবং পশ্চিমঘাট পর্বত ।
15. নদী কী কী কারণে নিত্যবহ হয় ?
উত্তর : নদী অববাহিকায় সারাবছর বৃষ্টি হলে কিংবা নদী বৃষ্টি ও বরফগলা জলে পুষ্ট হলে নিত্যবহ বা চিরপ্রবাহী হয় ।
16. দোয়াব ( Doab ) কাকে বলে ?
উত্তর: দুটি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে দোয়াব বলা হয় ।
17. নদীসংগম বলতে কী বােঝ ?
উত্তর : দুটি নদী যেখানে মিলিত হয় , সেই স্থানকে বলা হয় নদীসংগম । যেমন — গঙ্গা ও যমুনার সংগমস্থল হল এলাহাবাদ ।
18. বিনুনি নদী কাকে বলে ?
উত্তর : নদীখাতে অসংখ্য চড়ার সৃষ্টি হলে নদী অসংখ্য খাতে ভাগ হয়ে এঁকেবেঁকে বিনুনির ন্যায় প্রবাহিত হয় । একেই বিনুনি নদী বলে । পর্বতের পাদদেশে , মােহানায় বদ্বীপ থাকলে বিনুনি নদী দেখা যায় ।
19. নদীর কাজ কী কী ?
উত্তর : উৎস থেকে মােহানা পর্যন্ত নদীর কাজ হল ক্ষয় , বহন ও সঞ্চয় । এই তিনটি প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের পরিবর্তন হয় ।
20. নদী কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে ক্ষয়কাজ করে ?
উত্তর : নদী প্রধানত চারভাবে ক্ষয়কাজ করে । যেমন — ( i) জলপ্রবাহ ক্ষয় , ( ii ) অবঘর্ষ , ( iii ) ঘর্ষণ ক্ষয় এবং(iv) দ্রবণ ক্ষয় ।
21. নদী কোন কোন প্রক্রিয়ায় বহন করে ?
উত্তর : নদী প্রধানত চাররকম প্রক্রিয়ায় বহন করে । যেমন ( i ) দ্রবণ প্রক্রিয়া , ( ii ) ভাসমান প্রক্রিয়া , ( iii ) লম্মদান প্রক্রিয়া , ( iv ) আকর্ষণ প্রক্রিয়া ।
22.‘ যষ্ঠ ঘাত ’ - এর সুত্র ( Sixth Power Law ) কী ?
উত্তর : নদীর গতিবেগের সঙ্গে বহন ক্ষমতার সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক আছে । দেখা গেছে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হলে তার বহন ক্ষমতা বাড়ে ৬৪ গুণ হারে । এটি হল ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র , যার ব্যাখ্যা দেন ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে - W . Hopkins ।
23. কিউসেক ও কিউমেক কী ?
উত্তরঃ কিউসেক ( Cusec ) : কোনাে নদীতে একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনফুট ( Cubic feet per second ) জল প্রবাহিত হয় , তা হল কিউসেক । কিউমেক ( Cumec ) : নদীর একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনমিটার ( Cubic meter per second ) জল প্রবাহিত হয় , তাকে বলে কিউমেক ।
24. নদীর গতি ক - টি ও কী কী ?
উত্তর : নদীর তিনটি গতি ; যথা — উচ্চগতি , মধ্যগতি ও নিম্নগতি ।
25. আদর্শ নদী ( Ideal river ) বলতে কী বােঝ ও উদাহরণ দাও ।
উত্তর : উৎস থেকে মােহানা পর্যন্ত অংশে যে - নদীর তিনটি
গতি - প্রবাহই ( উচ্চগতি , মধ্যগতি , নিম্নগতি ) সুস্পষ্ট থাকে , তাকে বলে আদর্শ নদী । যেমন — গঙ্গা হল একটি আদর্শ নদী ।
26.গঙ্গানদীর উচ্চগতি , মধ্যগতি ও নিম্নগতির সীমানা নির্ধারণ করাে ।
উত্তর : গঙ্গার উচ্চগতি হল গঙ্গোত্রী হিমবাহের গােমুখ গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত ২৩০ কিমি , মধ্যগতি হল হরিদ্বার থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত এবং ধুলিয়ান থেকে বঙ্গোপসাগরের মােহানা পর্যন্ত হল গঙ্গার বদ্বীপ প্রবাহ ।
27. উচ্চগতিতে পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক কেন ?
উত্তর : উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ঢাল অনেক বেশি থাকে । ফলে নদী প্রবল বেগে প্রবাহিত হয় । এই অংশে অবস্থিত ছােটো - বড়াে প্রস্তরখণ্ড নদীর সঙ্গে বাহিত হওয়ার সময় অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নীচের দিকে ক্ষয় করে , ফলে উচ্চগতিতে নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অনেক বেশি হয় ।
28. গিরিখাত ( Gorge ) কাকে বলে ?
উত্তর : বৃষ্টিবহুল অতি উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও অতি গভীর হয় । এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকেই গিরিখাত বলে ।
29. গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয় কেন ?
উত্তর : উচ্চপর্বতের খাড়া ঢাল বেয়ে নদী যখন তীব্র গতিতে নীচে নেমে আসে তখন তার গতিবেগ অনেক বেশি থাকে । নদীর তীব্র জলস্রোত ও জলস্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখন্ডের আঘাতে নদীর নিম্নক্ষয় বেশি হয় । এই কারণে গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয় । নবীন ভঙ্গিল পর্বত উচ্চ বলেই এখানে গিরিখাত সৃষ্টি হয় ।
30. ক্যানিয়ন ( Canyon ) কাকে বলে ?
উত্তর : শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চগতিতে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে ' I ' আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করলে তাকে ক্যানিয়ন বলে।
31. ক্যানিয়ন অত্যন্ত গভীর হয় কেন ?
উত্তর : ক্যানিয়ন প্রধানত উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে দেখা যায় । এখানে প্রবাহিত চিরপ্রবাহী নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীরতা বাড়ায় কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় তেমন হয় না বলে উপত্যকাটি অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ হয় ।
32.নবীন ভঙ্গিল পর্বতে অসংখ্য গিরিখাত গড়ে ওঠে কেন ?
উত্তর : নবীন ভঙ্গিল পর্বতগুলি সুউচ্চ ও নরম শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চল । ফলে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলির ক্ষয়ের মাত্রা ( নিম্নক্ষয় ) অত্যন্ত বেশি হয় বলেই উপত্যকা হয়েছে অতি গভীর ও সংকীর্ণ ।
33. পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম কী ? এবং তা কোন নদীতে গড়ে উঠেছে ?
উত্তর : পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম হল গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এবং এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলােরাডাে নদীতে অবস্থিত ।
34. রাপিডস বা খরস্রোত কী ?
উত্তর : নদীগর্ভে পর্যায়ক্রমে কঠিন ও নরম শিলা অবস্থান করলে , কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলা বেশি ক্ষয় হয় এবং বন্ধুরতা বাড়ে । ফলে নদীর জল ধাপে ধাপে নেমে আসে । একে রাপিডস বা খরস্রোত বলে । হিমালয়ের অলকানন্দা , ভাগীরথী ইত্যাদি নদীতে রাপিডস দেখা যায় ।
35. প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল কাকে বলে ?
উত্তর : জলপ্রপাতের জল প্রবলবেগে যেখানে পড়ে বিশালাকার হাঁড়ির মতাে গর্তের সৃষ্টি হয় । একে প্লাঞ্জপুল বলে ।
36. মন্থকূপ ( Pot hole ) কী ?
উত্তরঃ নদীর উচ্চগতিতে জলস্রোতে বাহিত প্রস্তরখণ্ড অবঘর্ষ পদ্ধতিতে নদীগর্ভ ক্ষয় করে হাঁড়ির মতাে বড়াে বড়াে গর্ত সৃষ্টি করে । এই গর্তগুলিকে মন্থকূপ বা ( Pot hole ) বলে । মন্থকূপ সৃষ্টির মাধ্যমে নদীর গভীরতা বাড়তে থাকে ।
37. শৃঙ্খলিত শৈলশিরা ( Interlocking spur ) কী ?
উত্তরঃ পার্বত্য অঞ্চলে নদীপথের বাধাস্বরূপ শৈলশিরা বা পাহাড় থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয় । তখন শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে দেখে মনে হয় উপত্যকায় শৃঙ্খলিত হয়ে আবদ্ধ আছে । এটি হল আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা ।
38. মিয়েন্ডার ( Meander ) বা নদীবাঁক কাকে বলে ?
উত্তর : সমভূমি অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে বাধা থাকলে তা এড়ানাের জন্য নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয় । নদীর এই আঁকাবাঁকা প্রবাহকে মিয়েন্ডার বা নদীবাঁক বলে ।
39. মিয়েন্ডার ভুমিরূপের নামকরণের কারণ কী ?
উত্তরঃ তুরস্কের ‘ মিয়েন্ডারেস ’ নদীটি অত্যন্ত এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়েছে । এই ‘ মিয়েন্ডারেস ’ থেকেই নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথের নাম হয়েছে মিয়েন্ডার ।
40. নদীর মধ্য ও নিম্নগতিতে মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয় কেন ?
উত্তর : মধ্য ও নিম্নগতিতে নদীর বেগ হ্রাস পায় । ফলে নদী কোনাে বাধা পেলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এঁকেবেঁকে বাহিত হয় । তাই মধ্য ও নিম্নগতিতে নদীবাঁক বা মিয়েন্ডারের সৃষ্টি হয় ।
41. নদীচর ও নদীদ্বীপ - এর পার্থক্য কী ?
উত্তরঃ নদীগর্ভে পলি সঞ্চিত হয়ে সৃষ্ট ভূমিরূপ হল নদীচর এবং সেই চর অংশে আরও পলি সঞ্চিত হয়ে তা জলের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে বলে নদীদ্বীপ ।
42. বদ্বীপ ( Delta ) কী ?
উত্তর : প্রবাহের শেষপ্রান্তে মােহানায় নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে নদীবাহিত কাদা , পলি , বালি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে মাত্রাহীন ' ব ’ বা গ্রিক অক্ষর ডেলটা ( A ) - র মতাে যে - ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় , তা হল বদ্বীপ ।
43. ডেল্টা ( A ) নামকরণের কারণ কী ?
উত্তর : গ্রিক ঐতিহাসিক হেরােডােটাস নীলনদের মােহানায় তিনকোনাকৃতি নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিকে গ্রিক অক্ষর ডেল্টার সঙ্গে তুলনা করে একে ডেল্টা ( A ) নাম দেন । বাংলায় একেই বদ্বীপ বলে ।
44. গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও চর সৃষ্টি হয়েছে কেন ?
উত্তর : গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্য ও নিম্নগতি সম্পূর্ণই সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত । তাই এখানে নদীর মন্থর গতির কারণে নদীর দ্বারা বয়ে আনা পলি বালির বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কম থাকা । সেই পলি বালি নদীগর্ভে জমে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও নদীর সৃষ্টি করে । তা ছাড়া উক্ত নদী দুটির উৎসস্থল নরম পাললিক শিলাগঠিত হলে নদীতে পলির পরিমাণও খুব বেশি ।
45. প্লাবনভূমির মধ্যে কোন্ কোন্ ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ?
উত্তর : প্লাবনভূমির মধ্যে স্বাভাবিক বাঁধ ( লিভি ) , ঢালু স্তুপ , অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ , ঝিল , বিল ( জলাভূমি ) ইত্যাদি গড়ে ওঠে ।
46. স্বাভাবিক বাঁধ বা লিভি কী ?
উত্তর : নদীর দু - কুল ছাপিয়ে প্লাবন হলে সবচেয়ে বেশি পলি নদীর দুই তীরে জমা হয় । ফলে , যে একটু বেশি উঁচু নদীপাড় তৈরি হয় , তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বলে ।
47. খাড়ি ( Estuary ) কাকে বলে ?
উত্তর : নদী মােহানার শেষপ্রান্তে নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে ফানেল আকৃতির নদীমােহানাকে খাড়ি বলে । টেমস , লা প্লাটা নদীর খাঁড়ি অত্যন্ত চওড়া ।
48. সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খড়ি দেখা যায় কেন ?
উত্তর : সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে প্রতিনিয়ত তীব্র জোয়ারভাটা খেলে । এই অঞ্চলের নদী মােহানার বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারে নরম পলিমাটি গঠিত পাড় ভেঙে গিয়ে ফানেলাকৃতি বিশিষ্ট খাঁড়ির সৃষ্টি করে । তাই সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খাঁড়ি দেখা যায় ।
49. ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম ও অবস্থান লেখাে ।
উত্তরঃ ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম হল মাজুলি এবং এটি অসমে ব্ৰহ্মপুত্র নদে অবস্থিত ।
50. সমপ্রায়ভূমি কী ?
উত্তর : বৃষ্টিবহুল আর্দ্র অঞ্চলে নদীর জলপ্রবাহ , বৃষ্টির জল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রাচীন মালভূমি এবং উচ্চভূমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় পেতে পেতে একসময় উঁচুনীচু ঢেউ খেলানাে ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায়ভূমি বলা হয় ।
51. উদাহরণসহ প্রধান দু - রকম বদ্বীপের নাম লেখাে ।
উত্তর : প্রধান দু - ধরনের বদ্বীপ হল - i) ধনুকাকৃতি বদ্বীপ : উদাহরণ - গঙ্গা - ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ ও (ii) পাখির পায়ের মতাে বদ্বীপ : উদাহরণ — মিসিসিপি মিসৌরি বদ্বীপ ।
52. সুন্দরবনের দুটি গুরুত্ব লেখাে ।
উত্তর : ( i ) এটি পৃথিবীর অন্যতম বায়ােস্ফিয়ার পার্ক , যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে । ( i ) এই বনভূমি সামুদ্রিক ঝড় ও জলােচ্ছ্বাস আটকায় বলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কৃষিজমি লবণাক্ততার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে ।
53. সুন্দরবন অঞ্চলের দুটি দ্বীপের নাম লেখাে যেগুলি ক্রমশ বিলীন হচ্ছে ।
উত্তর : সুন্দরবন অঞ্চলের লােহাচড়া ও ঘােড়ামারা দ্বীপ ক্রমশ বিলীন হচ্ছে ।
54. আমাজন প্রচুর জল বহন করে কেন ?
উত্তর : আমাজন অববাহিকা সুবিশাল এবং অববাহিকার প্রায় পুরােটাই নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত । অববাহিকায় সারাবছর ধরেই প্রবল বৃষ্টি হয় বলেই এই নদ প্রচুর জল বহন করে ।
55. বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কঙ্গো নদী চিরপ্রবাহী কেন ?
উত্তর : কঙ্গো নদী নিরক্ষীয় অখুলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অববাহিকা অঞ্চলে প্রায় সারাবছর প্রবল বৃষ্টি হয় । সারাবছর বৃষ্টি হওয়ার কারণেই নদীটি চিরপ্রবাহী হয়েছে ।
56. পাখির পায়ের মতাে বদ্বীপ কীভাবে গঠিত হয় ?
উত্তর : মূল নদী অসংখ্য শাখা - প্রশাখায় ভাগ হয়ে পাখির পায়ের আঙুলের মতাে দীর্ঘ ও সংকীর্ণ হয়ে সমুদ্রের দিকে এগােলে নদী বরাবর সক্ষয়কার্যে পাখির পায়ের মতাে বদ্বীপ সৃষ্টি হয় । যেমন - মিসিসিপি মিসৌরী বদ্বীপ ।